আগ্রা-জয়পুর, সিমলা-মানালি, জম্মু-কাশ্মীর সহ অনেক রুটের পর্যটকদেরই কিন্তু দিল্লী হয়ে যেতে হয়। ফলে এক-দুই দিন যাত্রা বিরতি থাকে দিল্লী’তে। সেই দিনগুলো কাজে লাগিয়ে পুরো দিল্লী চষে বেড়াতে পারেন খুব সহজেই। আর যদি দিল্লী দর্শনের জন্যই যাওয়া হয় তাহলে তো কোন কথা নেই।
ঢাকা টু কলকাতাঃ
বাংলাদেশ থেকে অতি অল্প খরচে দিল্লী যাওয়ার রুট হলঃ ঢাকা থেকে যশোহর হয়ে বেনাপল; ভাড়া ছয়শত টাকা’র মধ্যে হয়ে যাবে। এরপর ইমিগ্রেশন শেষে বর্ডার পার হয়ে পেট্রাপল হতে বনগাঁ হয়ে হাওড়া। খরচ একশত টাকার মত, আর বাসে করে কলকাতা গেলে খরচ ২০০-৩০০ টাকা। তো সবমিলিয়ে সাতশত থেকে হাজার টাকায় কলকাতা। যাওয়া আসা দুই হাজার। এছাড়া ঢাকা থেকে সরাসরি কলকাতার বাস আছে ১৫০০-২০০০ টাকার মধ্যে।
কলকাতা টু দিল্লীঃ
এবার হাওড়া থেকে যাব দিল্লী। স্লিপার ক্লাসে চারটা ট্রেন হাওড়া থেকে দিল্লীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়ঃ (১) প্রভা এক্সপ্রেস (ট্রেন নাম্বার-১২৩০৩) সকাল ০৮:০৫ এ ছেড়ে গিয়ে পরদিন সকাল ০৭:৩৫ এ পৌঁছবে; চলে শুক্র, শনি, সোম এবং মঙ্গল বার। ভাড়া সাকুল্যে ৭০০ রুপী’র মত। (২) ইউ আবহা তুফান এক্সপ্রেস (ট্রেন নাম্বার-১৩০০৭) সকাল ০৯:৩৫ এ ছেড়ে গিয়ে পরদিন সন্ধ্যা ০৭:৪০ এ পৌঁছবে; চলে সপ্তাহের প্রতিদিন। ভাড়া সাকুল্যে ৬৫০ রুপী’র মত। (৩) হাওড়া দিল্লী কলকা মেইল (ট্রেন নাম্বার-১২৩১১) সন্ধ্যা ০৭:৪০ এ ছেড়ে গিয়ে পরদিন রাত ০৯:৪০ এ পৌঁছবে; চলে সপ্তাহের প্রতিদিন। ভাড়া সাকুল্যে ৬৫০ রুপী’র মত। (৪) এনডিএলএস দুরন্ত (ট্রেন নাম্বার-১২২৭৩) দুপুর ১২:৪৫ এ ছেড়ে গিয়ে পরদিন সকাল ০৬:২০ এ পৌঁছবে; চলে সপ্তাহের দুইদিন মাত্র, শুক্রবার এবং সোমবার। ভাড়া সাকুল্যে ৯৫০ রুপী’র মত। (৫) হাওড়া আনভাতি এক্সপ্রেস (ট্রেন নাম্বার-১২৩২৩) সন্ধ্যা ০৬:৩০ এ ছেড়ে গিয়ে পরদিন বিকেল ০৫:০০ এ পৌঁছবে; চলে সপ্তাহের দুইদিন মাত্র, মঙ্গল এবং শুক্রবার। ভাড়া সাকুল্যে ৬৫০ রুপী’র মত। এছাড়া ২১০০ রুপী ভাড়া দিয়ে আপনি চাইলে থ্রি টায়ার এসি’র রাজধানী এক্সপ্রেসে করে বিকেল ০৪:৫০ এর ট্রেনে চড়ে পরদিন সকাল ১০:৩০ নাগাদ দিল্লী পৌঁছে যেতে পারেন।
এবার করি দিল্লী হিল্লিঃ
রেলষ্টেশন থেকে বের হয়ে হাতের বাম দিকে মিনিট খানেক এগিয়ে গেলেই পেয়ে যাবেন মেট্রো ষ্টেশন। এখান হতে টিকেট কাটুন রাজীব চওক এর জন্য, বেশী দূর নয়, পার্শ্ববর্তী ষ্টেশন। এবার দিল্লী এসে কমখরচে থাকার জায়গার খোঁজ। আমাদের সুবিধার জন্য আমরা থাকব দিল্লীর রাজীব চওক এলাকায়। কারণ রাজীব চওক হল আমাদের কাঙ্ক্ষিত তিনটি মেট্রো লাইনঃ ইয়েলো, ব্লু এবং পারপেল এর ক্রস ষ্টেশন। শতাধিক হোটেল রয়েছে এখানে, আপনার বাজেটের মধ্যে যা সবচেয়ে ভাল হয় উঠে পড়ুন। এখানে ৫০০-৫০০০ রুপীর মধ্যে হোটেল পাবেন।
দিল্লী দর্শনের জন্য দিল্লীতে সরকারী বেসরকারী নানান দিল্লী সিটি ট্যুর প্যাকেজ আছে, যা অর্ধবেলা এবং পূর্ণবেলা দুইভাবেই আছে। খরচ ২৫০ রুপী থেকে ২০০০ রুপী পর্যন্ত। তো আমরা ঘুরব নিজে নিজে, কারণ আমরা গরীব মানুষ, আর তার সাথে দিল্লীর ট্রাফিক জ্যাম এড়াতে আমরা ব্যবহার করব দিল্লীর বিখ্যাত মেট্রোরেল। আসুন শুরু করা যাক। আমাদের লিস্টের পর্যটন কেন্দ্রগুলো মূলত দিল্লীর ছয়টি মেট্রো রুটের তিনটির মধ্যে আছেঃ ইয়েলো লাইন, ব্লু লাইন এন্ড পারপেল লাইন।
আমরা প্রথম দিন শুরু করব ব্লু লাইন ধরে। প্রথমেই আমরা রাজীব চওক হতে টিকেট কাটব আকসার ধাম ষ্টেশন এর। এখানে দেখব স্বামী নারায়ন আকসার ধাম; এটা দেখা শেষে আমরা মেট্রো করে চলে আসব ইন্দ্রপ্রস্থ ষ্টেশন। এখানে আছে গান্ধী স্মৃতি কেন্দ্র, পাশেই বিখ্যাত ফিরোজ শাহ কোটলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এগুলো দেখা শেষে আমরা চলে যাব পরবর্তী ষ্টেশন প্রগতি ময়দান, চাইলে পায়ে হেঁটেও যেতে পারেন, ঠিক পরের স্টপেজ। এখানে আছে বিখ্যাত ইন্ডিয়া গেট। তাই পায়ে হেঁটে আসটাই ভাল, রাস্তা দিয়ে দেখতে দেখতে যাবেন সেখানে। এরপর মেট্রো করে চলে যান রামকৃষ্ণ মার্গ আশ্রম ষ্টেশন, সেখানে আছে বিখ্যাত বিড়লা টেম্পল। চাইলে সকালবেলা এটা দিয়ে শুরু করে তারপর আকসার ধাম চলে যেতে পারেন। এতে করে সন্ধ্যেটা বিখ্যাত ইন্ডিয়া গেটে কাটাতে পারবেন। এরপর আর কি আবার রাজীব চওক, এবং হোটেলে প্রস্থান।
এইদিনের স্পটগুলো তথ্যাবলীঃ
স্বামী নারায়ন আকসার ধামঃ
গান্ধী স্মৃতিঃ
ইন্ডিয়া গেটঃ
পুরানা কিল্লাঃ
লক্ষ্মী নারায়ণ (বিড়লা) মন্দিরঃ
আর কে আশ্রাম মার্গ থেকে রাজীব চওক মেট্রো ভাড়া ০৮ রুপী।
দ্বিতীয় দিন সকালে আমরা শুরু করব ইয়েলো লাইন ধরে। আমরা প্রথমেই রাজীব চওক হতে ইয়েলো লাইনের টিকেট করে চলে যাব কুতুব মিনার ষ্টেশন। সেখান থেকে অটো রিকশা করে কুতুব মিনার দর্শন। এরপর সেখান থেকে আবার মেট্রো ষ্টেশন এসে টিকেট করব জোরবাগ পর্যন্ত। এখানে আমরা দেখব সফদারগঞ্জ টম্ব এবং সেখানে থেকে যাব প্যাটেল চওক সেখানে আছে বিখ্যাত জন্তর-মন্তর। জন্তর মন্তর ফুঁ শেষে আমরা যাব চওরি বাজার ষ্টেশন। এখানে নেমে দিল্লী জামে মসজিদ দেখে পায়ে হেঁটে হেঁটে চলে আসব চাঁদনী চওক এলাকায়। এখানে ঘুরাঘুরি করে চলে যাব লালকেল্লা। সন্ধ্যের আগে আগে বের হয়ে এসে কিছু চা-নাস্তা করে আবার লালকেল্লা, রাতের লাইট এন্ড সাউন্ড শো দেখতে। এরপর পুরাতন দিল্লীর কাবাব আর বিরিয়ানি দিয়ে ডিনার করে চাঁদনী চওক মেট্রো ষ্টেশন হতে টিকেট করে সোজা রাজীব চওক। হোটেলে গিয়ে বিশ্রাম নিন।
এইদিনের স্পটগুলো তথ্যাবলীঃ
কুতুব মিনারঃ
সফদারগঞ্জ টম্বঃ
জামে মসজিদঃ
চাঁদনীচকঃ
লালকেল্লাঃ
তৃতীয় দিন আমাদের রুট হল পারপেল লাইন। এদিন আমরা দিল্লী হতে ব্যাক করব, তাই এদিনের লিস্ট ছোট। প্রথমেই সকাল বেলা রাজীব চওক হতে জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়াম স্টেশনে চলে আসুন। এখানে একে একে দেখুন হুমায়ুন টম্ব, নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগাহ, লদী গার্ডেন। আর স্টেডিয়ামে তো চোখ যাবেই। এখান থেকে এবার টিকেট কাটুন কালকা মন্দির এর, সেখানে আছে বিখ্যাত লোটাস টেম্পল। মন ভরে দেখে নিয়ে ব্যাক করুন রাজীব চওক। আর যদি সকাল বেলা ব্যাগ নিয়েই বের হন, তাহলে সুবিধামত সময়ে চলে আসুন রেল ষ্টেশন ফিরতি ট্রেন ধরার জন্য।
এইদিনের স্পটগুলো তথ্যাবলীঃ
হুমায়ূনের টম্বঃ
নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগাহঃ
লদী গার্ডেনঃ
লোটাস টেম্পলঃ
অবস্থানঃ নেহেরু প্লেস এর নিকটে, দক্ষিণ নতুন দিল্লী।
- ধন্যবাদ।
Office Address:
Trip Silo Office Adress: House # 477 (2nd Floor), Road # 32, New DOHS, Mohakhali. Dhaka # 1206.
Contact Number: 01689777444 , 01873111999
Office: +88 09678 111 999
Facebook Page: facebook.com/tripsilo/