আমরা ইন্ডিয়াতে প্রায়ই ঘুরতে যাই অনেক সময় আমাদের চিন্তা থাকে শপিং করবো কিভাবে করবো কোথায় কম খরচে পাবো ? এই বিষয় গুলো নিয়ে জানতে চান তাহলে আপনাদের জন্য এই ব্লগটি অনেক দরকার। অনেক সময় আমারা ঘুরি আবার কেনাকাটা করি ,আবার এমনও হয় যে আমাদের শুধু নিয়ত থাকে কিনবো । কিন্তু দাদা সময় একটা বড় ব্যাপার ইন্ডিয়া যেতে আসতে সময় লাগে দুইদিন আবার একদিন থাকা কতো ঝামেলা খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি যে টাকা খরচ করে যাবো তা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কিনা যায়। আচ্ছা বলছি বলছি এরও সমাধান আছে। এটা শুধু যারা শপিং এর জন্য যেতে চান তাদের জন্য।
ভারতবর্ষে শপিং করার জন্য সবচেয়ে সস্তা উপায় হল আগরতালা কারন আপনি যদি কলকাতা তে যান আপনার যাওয়া আসা থাকা খাওয়া মিলিয়ে অনেক পরে যাবে আবার আপনাকে যেতে একদিন আসতে একদিন আবার আবার থাকতে হবে একদিন ৩ দিন তো চলে যাবে সে হিসেবে আপনি আগরতলা দিনে গিয়ে দিনেও আসতে পারবেন। কি বিশ্বাস হচ্ছে না আচ্ছা একটু অপেক্ষা করুন নিজেই বুঝবেন।
আপনি ঢাকা থেকে আগরতলাতে যাওয়ার জন্য ট্রেনে বা বাসে করে যেতে পারেন। আগরতলাতে আপনি সরাসরি বাসে করে যেতে পারেন তবে বাস প্রতিদিন যায় না ।বাস সপ্তাহে একদিন যায় সেটা সোমবার শ্যামলী পরিবহন সকাল ৮.৩০ মিনিটে ভাড়া ৪০০ টাকা তবে BRTC বাসও যায় সরাসরি আগরতলাতে।আবার আপনি যেকোনো দিন বাসে যেতে চাইলে ভেঙ্গে যেতে হবে । যেমন ঢাকা কমলাপুর থেকে আপনি বাসে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাবেন প্রথমে সকালে গেলে জ্যাম কম পড়বে সময় আনুমানিক ২.৫-৩ ঘণ্টা লাগবে। তারপর ব্রাহ্মণবাড়িয়া নেমে অটো তে করে আখাউরা যেতে হবে সিএনজি তে করে ভাড়া ৪০-৫০ টাকা নিবে জনপ্রতি শেয়ারে।তারপর আখাউরা নেমে সিএনজি তে করে বাউতলা চেকপোস্ট যেতে হবে ভাড়া ২০ টাকা নিবে দামাদামি করে নিবেন নাহলে ভাড়া বাড়িয়ে দিবে।আগরতলা যাওয়ার জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হল ট্রেন । ঢাকা থেকে ট্রেন ছাড়ে সকালে ৬.৩০ এবং ৭.৪৫ এ যদি সকালে সকালে যেতে চান তাহলে এই দুটি ট্রেনে যাওয়া ভাল। আখাউরা যেতে ঢাকা থেকে ২-২.৩০ ঘণ্টা লাগবে।তারপর আখাউরা নেমে সিএনজি তে বাউতলা চেকপোস্ট চলে যাবেন ভাড়া আগের মতই ২০ টাকা শেয়ারে। আবার আগরতলাতে যদি দিনে গিয়ে দিনে আসতে চান কিনাকাটা করে তাহলে ঢাকা থেকে রাতের ট্রেনে আখাউরা যেতে পারেন রাতে ১১.৩০ এ ট্রেন তুরনা নিশিথা ছাড়ে আনুমানিক রাত ৩ টা বাজে পৌঁছায় আপনি স্টেশানে রাত কাটাতে পারেন। ট্রেনে ভাড়া ১৪০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা ভাড়া পড়তে পারে ট্রেন ভেদে (শোভন শ্রেণী)। তার পর সকাল হলে চেকপোস্টে চলে যাবেন সকাল ৭.৩০ থেকে বর্ডার খুলে। সকাল সকাল ঢুকলে আপনি খুব অল্প সময় এ বর্ডার ক্রস করতে পারবেন কারন সকাল ১০ টার পর বর্ডার এ ভীর হয়।
আচ্ছা অভিনন্দন বর্ডার ক্রস করার জন্ন।এখন বর্ডার থেকে আপনি ২০ রুপিতে অটো করে বটতলা চলে যাবেন ।অবশ্য বর্ডার থেকে ২ মিনিট হাঁটলে গোল চক্করে গেলে ১০ রুপী ভাড়া নিবে বটতলার জন্য।
আচ্ছা বটতলাতে অনেক হোটেল আছে আপনি যেকোনো একটাতে থাকতে পারেন ।যেমন হোটেল রাঙ্গামাটি তে থাকতে পারে ২ জনের রুম ৯০০ রুপী আর একজনের জন্য ৭০০ রুপি ।হোটেল টা ভাল ।ওই হোটেলের মালিক বাংলাদেশি।আবার আর কিছু হোটেল আছে আর সস্তা যেমন বটতলাতে কিছু হোটেল আছে ২ জনের ৪০০ রুপী অবশ্য শেয়ার বাথরুম।আবার বটতলা থেকে একটু আগিয়ে অটো তে শেয়ারে ১০ রুপী তে কামান চৌমুহনি চলে যাবেন ওখানে একটা মসজিদ গলি আছে ওখানে রুম একটু কমে পাওয়া যায় মসজিদ এর সাথে ১ জনের রুম ৪৫০ রুপে ২ জনের ৫৫০ রুপি রুমে বাথরুম আছে ।আরেকটা কথা বলে নেই আগরতলা অনেক ছোট শহর। এই শহরে অনেক চৌরাস্তা আছে এদের কে চৌমুহনি বলে।
আগরতলাতে বটতলাতে অনেক খাবারের হোটেল আছে আপনি খেয়ে নিতে পারেন পছন্দ মত।তবে হোটেল রাঙ্গামাটির সাথে একটা খাবার হোটেল আছে ওটা একটু সস্তা। আপনি ভাত সবজি ভাজি ডাল খাবেন ৬০ রুপিতে। আগরতলাতে রাতে বিভিন্ন স্ট্রিট ফুড পাওয়া যায় মম খেতে পারেন প্রতি প্লেট ৫০ রুপি নেয় ৮ পিস দেয়।
আগরতলাতে মোটামুটি আপনি সব পাবেন যা কলকাতাতে পেতেন দাম একটু ভিন্ন হতে পারে। বটতলা পার হয়ে সামনে কামান চৌমুহনির দিকটাতে জাবেন।অখান থেকে সব গুলো শপিং প্লেস গুলো কাছে।এবার জানিয়ে দিচ্ছি আগরতলার জনপ্রিয় কিছু শপিং প্লেসঃ
বিগ বাজার
কামান চৌমুহনির আগে বিগ বাজার পাবেন ওখানে কেনাকাটা করতে পারেন। বিগ বাজারের পাশে বিভিন্ন ব্রান্ড এর শোরুম আছে ফাস্টট্রাক এর ঘড়ি পাবেন, পুমা, এডিডাস, লিভাইস বিভিন্ন ব্রান্ড এর দোকান পাবেন। বিগ বাজারে সব পাবেন কাপর, কসমেটিটিকস, জুতা, চকলেট পাবেন। আর কম কিনতে চাইলে বিগ বাজার থেকে নিতে পারেন।
কামান চৌমুহনি
কামান চৌমুহনির ওইদিকে অনেক দোকান আছে কাপড়ের ঘুরে দেখতে পাড়েন ওখানে বিভিন্ন ধরনের দোকান আছে ।কামান চৌমুহনি তে woodland এর শোরুম আছে।
আগরতলা সিটি সেন্টার
আগরতলা সিটি সেন্টার আছে ওখানে অবশ্য তেমন কিছু পাওয়া যায় না। বিকেলের দিকে গিয়ে দেখতে পারেন।
গোল বাজার
গোল বাজার কামান চৌমুহনি থেকে অনেক কাছে চাইলে ১০ মিনিটে হেঁটে চলে যেতে পারেন ।যারা চকলেট, তেল সাবান শ্যাম্পু আর কিছু কিনতে চান তারা গোল বাজার চলে যাবেন ওখানটা হচ্ছে পাইকারি মার্কেট।আপনি বেশি কিনলে সস্তায় কিনতে পারবেন আবার গোল বাজারে অনেক কিছু পাওয়া যায়। ওখানে আরেকটা মার্কেট আছে কলকাতা বাজার ওটা বিগ বাজারের মত।ওখানেও অনেক কিছু আছে সস্তায় পাবেন। কাপড়ে অনেক ছাড় থাকে।
কিনাকাটা শেষে আপনি চাইলে বাংলাদেশে চলে আসতে পাড়েন অথবা রাতে থেকে সকালে আসতে পারেন।
আসলে আগরতলাতে দেখার তেমন কিছু নেই আপনারা চাইলে নেহেরু পার্ক ঘুরতে পারেন এটা রাধানগর এর কাছে। তবে আগরতলা শহরটা মুটামুটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাস্তায় হাটাহাটি করে মজা পাবেন। ওখানের মানুষ গুলো ভাল বাংলাদেশের মানুষ কে সম্মান করে অন্য state এর মতো বাংলাদেশিদের ignore করে না ।আপনি চাইলে আগরতলার গ্রাম গুলো ঘুরতে পারেন যেমন বিশালঘর অবশ্য বাংলাদেশের গ্রামের মতই।
আপনি যদি দিনে দিনে ফিরে আসতে চান অবশ্যই ৫ টার মধ্যে বর্ডারে চলে আসবেন ।কারন দেরি করলে বর্ডার বন্ধ হয়ে যাবে বর্ডার ৬ টার মধ্যে বন্ধ হয় ।দেরি করলে ইমিগ্রেশন অফিসার ঝামেলা করে ছাড়তে চায় না অপমান করে বলবে তোমাদের কিনাকাটা শেষ হয় না। তাই আগে আগে চলে যাওয়া ভাল। আর যদি কেও রাতে থেকে সকালে আসতে চান তাও করতে পারেন সকাল ৭.৩০ থেকে বর্ডার খুলে। আসার নিয়ম একই আপনি বটতলা থেকে বর্ডারে চলে আসবেন। আরেকটা বিষয় আসার দিন ইন্ডিয়ান কাস্টমস ডলার ভাঙ্গানোর রিসিট দেখতে চায় এটা রাখা ভাল তবে না থাকলেও প্রবলেম নেই।বাংলাদেশি কাস্টমস আসার সময় টাকা চায়। অনেক জিনিস দেখলে চা নাস্তার টাকা চায়। বেশি কথা বললে ১০০ টাকা ধরিয়ে দিবেন।তারপর চলে আসবেন আপন দেশে।
সবার জন্য শুভ কামনা রইল।ভ্রমন হউক আনন্দের।Happy Travelling