এশিয়ার একটি ছিমছাম গুছানো শহর মালেশিয়া । প্রতিবছর অসংখ্য ভ্রমণপিয়াসী বাংলাদেশি মালেশিয়াতে ঘুরতে যায় । ঘুরতে যাবার জন্য পছন্দের তালিকায় মালেশিয়ার নাম প্রথম ৩ টি দেশের মদ্ধেই থাকে। মুলত মালেশিয়া একটি মুসলিম প্রধান দেশ এবং এর রাজধানী কুয়ালালামপুর । প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মালেশিয়াতে মাত্র একটিই ঋতু, বর্ষা। তাই এখানে প্রায় প্রতিদিন কম বেশি বৃষ্টি হয়। বাইরের আবহাওয়াটা গরম অনুভূত হয়। সম্পূর্ণ দেশ জুড়ে দেখা যায় পাহাড়ি রাস্তা আর বন-জঙ্গল। ডক্টর মাহাথির মোহাম্মদকে বলা হয় আধুনিক মালেশিয়ার জনক । দীর্ঘ ২৭ বছরের পরিশ্রম তার বিফলে যায়নি, আজ মালেশিয়া পৃথিবীর একটি উন্নত দেশে পরিণত হয়েছে ।
মালেশিয়াতে যাবার কোন পরিকল্পনা থাকলে আমাদের এই ব্লগটি একবার ভাল করে দেখে নিন কথা দিচ্ছি আপনার উপকার হবে ।
কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরটি কুয়ালালামপুর মূল শহর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে।
কুয়ালালামপুরে অবশ্য এয়ার এশিয়ার একটি নিজস্ব বিমান বন্দর রয়েছে তাই এয়ার এশিয়াতে মালয়েশিয়া আসলে খরচ অনেক কম হবে আপনার ।
কুয়ালালামপুর বিমান বন্দরে অবতরন করার পর মূল শহরে আসতে হলে আপনাকে টেক্সি অথবা বাস যোগে আসতে হবে। কুয়ালালামপুরে অবস্থান করার জন্য আপনি থাকার হোটেল বুকিট বিনতাং এলাকা বেছে নিতে পারেন। এখানে পর্যটক হিসেবে মালয়েশিয়া এসে বুকিট বিনতাং এলাকায় থাকলে আপনি সব রকমের আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন।
এয়ার লাইন্সের ভিন্নতার কারণে টিকিটের মূল্য বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে । ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া যেতে টিকিট কাটতে হবে এয়ার এশিয়া, বাংলাদেশ বিমান, ইউ এস বাংলা, ইউনাইটেড এয়ার, রিজেন্ট এয়ার ওয়েজ, ও মালয়েশিয়ান এয়ার লাইন্সে। সময়ভেদে টিকেটের দামের কম-বেশি হয়।
যাওয়া-আসার টিকেট মিলিয়ে ইউনাইটেড এয়ার ও রিজেন্ট এয়ারওয়েজের টিকিটের দাম পড়বে ২২ হাজার ৫শ' থেকে ২৬ হাজার টাকা। বাংলাদেশ বিমানের টিকিট পাবেন ২৪ হাজার ৫শ' থেকে ৩০ হাজার টাকায়।
মালয়েশিয়ান এয়ারের টিকিটের মূল্য একটু বেশি পরবে, মালয়েশিয়ান এয়ারে গেলে আপনাকে ২৭ হাজার থেকে ৩৬ হাজার ৫শ' টাকা পর্যন্ত গুন্তে হতে পারে ।
ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর পৌঁছতে সময় লাগবে সাড়ে তিন ঘণ্টা। বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়েশিয়ার সময়ে পার্থক্য ২ ঘণ্টা। তাই গভীর রাতে এয়ারপোর্টে পৌঁছানোর ঝামেলা এড়াতে রাতের বিমানে রওনা দেওয়াই উত্তম।
বেশির ভাগ পর্যটক মালয়েশিয়া আসার পর থাকার জন্য বুকিট বিনতাং এলাকার হোটেল গুলোই বেছে নেয়। হোটেলের ভাড়া দিন প্রতি ৫০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত থেকে ৫০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত। আপনার পছন্দ অনুযায়ী ঠিক করে নিন আপনি ৩ তারকা, ৪ তারকা নাকি ৫ তারকা হোটেলে থাকবেন।
মালয়েশিয়ার সব হোটেলেই চেক ইন করার সময় দুপুর ১২টা। তাই সকালে কুয়ালালামপুর পৌঁছে হোটেল খুঁজতে বেরুলে পড়তে পারেন বিড়ম্বনায় । তাই আগেই হোটেল বুকিং করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
অসংখ্য ভাল মানের হোটেলের মধ্যে রয়েছে টাইমস স্কয়ার, পার্ক রয়্যাল, রয়্যাল বেনতান, ফেডারেল ইন্টারন্যাশনাল ইত্যাদি পর্যটকদের মধ্যে বেশি জনপ্রিয়।
টাইমস স্কয়ার ও পার্ক রয়্যালে সকালের বুফে নাস্তাসহ দিনপ্রতি খরচ পড়বে ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। আর ফেডারেল ইন্টারন্যাশনাল ও রয়্যাল বেনতানে ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যেই থাকতে পারবেন।
পরিবার নিয়ে গেলে নিতে পারেন টাইমস স্কয়ারের স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টগুলো। রান্না-বান্নাসহ সকল ঘরোয়া পরিবেশই পাওয়া যাবে এই অ্যাপার্টমেন্টগুলোতে। তবে দিনপ্রতি গুনতে হবে ১৬ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা।
এছাড়া ফেডারেল ইন্টারন্যাশনাল ও রয়্যাল বেনতানে পাবেন সর্বোচ্চ চারজনের প্যাকেজ, খরচ ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। তবে এই দুই প্যাকেজে নেই সকালের নাস্তার ব্যবস্থা।
১৯৯৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু টুইন টাওয়ার। দুই টাওয়ারের মাঝে আছে একটি ব্রিজ, মাঝের এই ব্রিজকে বলা হয় স্কাই ব্রিজ। ৫০ রিঙ্গিত বা ১২শ' টাকার বিনিময়ে দর্শনার্থীরা উঠতে পারবেন এই স্কাইব্রিজে। কুয়ালালামপুরের মধ্যেই আছে টুইন টাওয়ার নামে খ্যাত প্যাট্রোনাস টাওয়ার।
পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার বলতে গেলে মালেশিয়ার সব থেকে জনপ্রিয় স্থান । আপনি মালেশিয়া ঘুরতে গিয়েছেন আর টুইন টাওয়ার দেখতে যাননি এটা হতেই পারে না । রাতের টুইন টাওয়ারের সৌন্দর্য দিনের টুইন টাওয়ারের চেয়ে পুরো ব্যতিক্রম। সন্ধার পর টুইন টাওয়ারের সামনে কে এল সি সি এলাকায় যাওয়াটাই অধিকতর উত্তম সময়। সন্ধা থেকে পর্যটকদের আগমন বাড়তে থাকে এবং প্রতিদিন এখানে পর্যটকদের মিলন মেলা বসে ।
মালয়েশিয়া গিয়ে লাঙ্কাউই না গেলে হয়ত সমস্ত খরচই বৃথা। কুয়ালালামপুর থেকে ৪১৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকত অঞ্চল আন্দামান সমুদ্রের ১০৪টি দ্বীপের সমষ্টি। কেবল কার, অপরুপা ঝরনার কলকল সুরধনি, সমুদ্রের নিচ দিয়ে রাস্তা, ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট আরও অনেক কিছুর দেখতে পারবেন এখানে ।
একটু ভিন্ন অভিজ্ঞতার জন্য একটি নৌকা ভাড়া করে চলে যেতে পারেন ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের ভেতর। সেখানেও আছে বাদুরের গুহা, ঈগলের গুহা ইত্যাদি দর্শনীয় স্থান।
পেনাং মালয়েশিয়ার আরেকটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান । এটি কুয়ালালামপুর থেকে ৩৫৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত । মুলত পেনাং এর মূল আকর্ষণ কেবল ট্রেন। প্রাপ্তবয়ষ্কদের জন্য আট রিঙ্গিত আর ছোট ও বৃদ্ধদের জন্য চার রিঙ্গিতের বিনিময়ে এই ট্রেনে চড়ে যেতে পারবেন পেনাঙ্গ পর্বতে। এটি অবশ্যই আপনার জন্য দারুন একটি অভিজ্ঞতা বয়ে আনবে ।
মেঘের রাজ্য গেনটিং হাইল্যান্ডস ভুপৃষ্ট থেকে প্রায় ১৮৬৫ মিটার বা ৬১১৮ ফুট উঁচুতে । মালয়েশিয়ার পাহাংয়ে গেনটিং অবস্থিত।
কেএল সেন্ট্রাল থেকে গেনটিং হাইল্যান্ডসের দুরত্ত প্রায় ৬০কিলোমিটার। বাসে যেতে সময় লাগে এক ঘন্টা দশ মিনিটের মতো। ১৯৬৫ সালে গেনটিং রিসোর্ট চালু হয়। ম্যাক্সিমস, গেনটিং গ্র্যান্ড হাইল্যান্ড সহ বেশ কটি তারকা হোটেল, ক্যাসিনো সেখানে অবস্থিত।
এখানের অাবহাওয়া কুয়ালালামপুরের ঠিক বিপরীত। মেঘ অার ঠাণ্ডা বাতাসে এখানে তাপমাত্রা অনেক নিচে। ১০/১২ ডিগ্রি হবে, ঠান্ডার কাপড় সাথে না আনলে শীতের কবলে পড়তে হবে। পাহাড়ের অাকাঁবাকাঁ পথ ধরে প্রায় ঘন্টাখানেকের মধ্যেই পৌছে যাবেন প্রকৃতির স্বর্গরাজ্য গেনটিং হাইল্যান্ডসে।
মালাক্কা সিটি যেন বসে আছে তার সমস্ত ঐতিহাসিক সৌন্দর্য নিয়ে । মালয়েশিয়ার ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে চলে যেতে পারেন মালাক্কা সিটিতে।
সব ধরণের খাবারের সমারোহ আছে মালেশিয়াতে । এখানে আপনি ইন্ডিয়ান, পাকিস্তানি ও বাঙালি রেস্তোরা খুঁজলেই পাবেন। তাছাড়াও ফাস্টফুড চেইনের স্বাদ নিতে পারবেন মালয়েশিয়ায়। কমতি নেই স্থানীয় খাবারের। সকালের নাস্তায় দুই রিঙ্গিতের বিনিময়ে খেতে পারেন চানারুটি।
দুপরের খাবারে খেতে পারেন মিক্সড ফ্রাইড রাইস নাসিগরেঙ্গ, খরচ পড়বে মাত্র সাত থেকে আট রিঙ্গিতের মত।
এছাড়াও পাবেন কাচ্চি বিরিয়ানি, তন্দুরি চিকেন, কাবাব ইত্যাদি।
২০ রিঙ্গিত বা ৫শ' টাকাতেই ভরপেট খেতে পারবেন এই রেস্তোরা গুলোতে। ডেজার্ট হিসেবে বেছে নিতে পারেন সিক্রেট রেসিপির কেক, এটি বেশ সুস্বাদু ।
মালয়েশিয়ার বেশ কিছু শপিং মল আছে যেখানে সাদ্ধ্যের মধ্যেই আপনার সেরা শপিংটা সেরে ফেলতে পারবেন । কেনাকাটার জন্য আপনার পরিবারকে নিয়ে যেতে পারেন প্যাভিলিয়ন, টাইমস স্কয়ার, বিবি প্লাজা, সানওয়ে পিরামিড মার্কেট ইত্যাদি শপিং মলগুলোতে।
পৃথিবীর সবগুলো ব্র্যান্ডের পণ্যই পাবেন এই মার্কেটগুলোয়। এছাড়া মালয়েশিয়ার স্থানীয় পণ্যগুলোও গুণগত মান সম্পন্ন, দামও ক্রয়সীমার মধ্যেই।
আর ইলেক্ট্রনিকস পণ্য কিনতে চাইলে অবশ্যই যেতে হবে ল-ইয়েট প্লাজাতে ।
মালেয়শিয়া ভিসা করতে যা যা প্রয়োজন হয়:
* ৬ মাসের ভেলিড পাসপোর্ট
* দুই কপি ছবি।
* যদি চাকুরী করেন তাহলে অফিস থেকে NOC লেটার,
* ভিজিটিং কার্ড
* ব্যবাসা করলে ট্রেড লাইসেন্স
* Bank statement and Bank solvency
* এয়ার টিকিট বুকিং
১০ -১২ দিনের মধ্যেই মালেয়শিয়া ভিসা হয়ে যায়, তবে এমারজেন্সিতে ভিসা করালে আরও সময় কম লাগে । এক্ষেত্রে টাকা বেশি গু্নতে হবে ।
Office Address:
Trip Silo Office Adress: House # 477 (2nd Floor), Road # 32, New DOHS, Mohakhali. Dhaka # 1206.
Contact Number: 01689777444 , 01873111999
Office: +88 09678 111 999
www.tripsilo.com