কোনো কোনো স্থান রয়েছে, যেখানে ভ্রমণ করার জন্য কোনোধরনের পূর্ব পরিকল্পনা প্রয়োজন হয় না। খরচের কথা চিন্তা করলে দুবাই তেমন কোনো স্থান নয়। দুবাই ভ্রমণ করতে গেলে আপনাকে আগে থেকেই পর্যাপ্ত পরিকল্পনা করতে হবে। আর তাহলেই অল্প খরচে ভ্রমণ করা সম্ভব হবে। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
১. বুকিং
দুবাইতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বুকিংয়ের জন্য আলাদা কিছু কৌশল খাটাতে হবে। হোটেল বুকিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যয়বহুল হোটেলগুলোর সাইটে না যাওয়াই ভালো। তার বদলে airbnb.co.in, vrbo.com, 9flats.com সাইটগুলোতে যেতে পারেন। এরা আপনার জন্য কম খরচে হোটেল বা অ্যাপার্টমেন্টে থাকার ব্যবস্থা করবে। এদের সাইট থেকেই অনলাইনে বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন।
২. বুর্জ খলিফাদুবাই ভ্রমণে গেলে বুর্জ খলিফাতে ভ্রমণ করবেন না, তা কি হয়? তবে আপনার জানা উচিত, বুর্জ খলিফায় ভ্রমণের আগেই আপনার সেজন্য আবেদন করতে হবে এবং সেজন্য একটি ‘টাইম স্লট’ নিয়ে নিতে হবে। আর বুকিংয়ের সময় সূর্যোদয়ের সময়টি নিতে পারলে সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে পাবেন।
৩. ডেসার্ট সাফারি
দুবাই বেড়াতে গেলে মরুভূমিতে সাফারি ভ্রমণ করতে কারো ভুল হওয়ার কথা নয়। আর এক্ষেত্রে বহু প্যাকেজ টুরই রয়েছে, যারা দুবাইতে সাফারি ভ্রমণ করায়। অধিকাংশ সাফারি ভ্রমণেই থাকে বালিয়াড়ি ভ্রমণ, বেলি ড্যান্স, শিশা, তনুরা ড্যান্স, কোয়াড বাইক ভ্রমণ এবং খাবার। তবে মূল পার্থক্য থাকে তারা আপনাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে এবং কি খাওয়াচ্ছে তার ওপর। এক্ষেত্রে শারজাহ থেকে বাইরে যাওয়াই ভালো। আর আগে থেকে ভ্রমণের বিস্তারিত জানালে দরদামেও সুবিধা হবে।
৪. অ্যাডভেঞ্চার রাইড
পার্কে অ্যাডভেঞ্চার করার জন্য দুবাইতে রয়েছে অ্যাডভেঞ্চার ওয়ার্ল্ড। দুবাই শহর থেকে এক ঘণ্টার ড্রাইভিংয়ে সেখানে যাওয়া যেতে পারে। সেখানে রয়েছে ফরমুলা রোসা নামে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগামি রোলার কোস্টার। সব বয়সীদের জন্যই সেখানে নানা অ্যাডভেঞ্চার রাইড রয়েছে। এ রাইডগুলোও অনলাইনে বুকিং দেওয়া যায়।
এ ছাড়াও রয়েছে ইয়াস আইল্যান্ডের ফেরারি ওয়ার্ল্ড। ভ্রমণের জন্য এটাও অসাধারণ।
আটলান্টিস, দ্য পামদুবাইয়ের আটলান্টিস হোটেল শুধু থাকার জায়গাই নয় এটি একটি বিনোদন কেন্দ্রও বটে। এতে রয়েছে ওয়াটার রাইড ও প্রাইভেট বিচ। সেখানে রয়েছে বন্ধুবৎসল ডলফিন ও অ্যাকুয়াভেঞ্চার ওয়াটার পার্ক। শিশুরা এ স্থান খুবই পছন্দ করে।
সমুদ্রের বুকে পাম গাছের আকারে বিশাল দ্বীপ দুবাইয়ের আরেকটি আকর্ষণ। এ স্থানটিও ভ্রমণের জন্য আদর্শ। এ ছাড়াও দুবাইয়ের মনোরেল ভ্রমণও পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।
৫. দুবাইয়ের পানির জগত
দুবাই বহু আগে থেকেই সমুদ্রের জন্য বিখ্যাত। আর এ পানির জগৎ ভ্রমণের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থানও বটে। দুবাইতে তাই রয়েছে ইয়েলো বোট রাইডস। এ ভ্রমণে দেখা যাবে পাম দ্বীপ, বুর্জ আল আরব, দুবাই মেরিনা ও পাম লেগুন। এ ভ্রমণও অনলাইনে করে রাখা যায়।
৬. কেনাকাটা
দুবাইতে রয়েছে মূল্যবান কেনাকাটার সুযোগ। তবে আপনি যদি মূল্যবান ব্র্যান্ডের জিনিস কিনতে পছন্দ করেন তাহলে দুবাই হতে পারে আপনার অন্যতম পছন্দ। ডিউটি ফ্রি কিংবা করমুক্ত কেনাকাটা ইত্যাদি নানা সুবিধার প্রলোভন বিক্রেতারা দিলেও বাস্তবে এখানে আপনার কমদামে জিনিস কেনার সুযোগ খুবই সীমিত।
৭. শপিং মল
দুবাইতে রয়েছে বেশ কয়েকটি বিশ্বখ্যাত শপিং মল। এগুলো কেনাকাটার পাশাপাশি ঘুরে বেড়ানোর জন্যও অসাধারণ। আর এর মধ্যে রয়েছে দুবাই মল। ১২০০ দোকান সমৃদ্ধ এ মলটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় শপিং মল। বুর্জ খলিফার নিকটেই রয়েছে এটি। এতে রয়েছে জলপ্রপাত ও অ্যাকুরিয়াম। এতে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দামি গাড়িসহ নানা মূল্যবান পণ্য।
৮. গ্লোবাল ভিলেজ
দুবাইতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নিজস্ব পরিবেশে কেনাকাটার জন্য রয়েছে গ্লোবাল ভিলেজ। এখানে বিভিন্ন পরিবেশে রয়েছে ৩০টি প্যাভিলিয়ন। এসব প্যাভিলিয়নে গেলে বিভিন্ন দেশের পরিবেশ ও সংস্কৃতির পরিচয় পাওয়া যাবে।
০৯. সৌকস
দুবাইতে রয়েছে বহু পুরনো বাজার বা সৌকস। এগুলো প্রাচীন দুবাইয়ের দিকে তাকানোর একটি উপায়ও বটে। দুবাইয়ের স্বণের বাজারে পাওয়া যাবে কমদামে স্বর্ণ।
১০. অন্যান্য আকর্ষণ
দুবাই গাড়িপ্রেমীদের জন্য একটি তীর্থস্থান বলা যেতে পারে। এ শহরে রয়েছে মূল্যবান ফেরারি, স্বর্ণের রেঞ্জ রোভার, রোলস রয়েস ও নানা এ ধরনের গাড়ি। এ গাড়িগুলো ছাড়াও রয়েছে প্রাইভেট বিলাসবহুল ইয়ট।