যারা বালি যাবেন বা যাওয়ার ইচ্ছা আছে তাদের জন্য এ লেখা যা কিছুটা হলেও আপনার সাহায্যে আসবে। বালি দ্বীপ সবচেয়ে সুন্দর জায়গা। একটা জায়গায় এতো কিছু দেখার আছে যা আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। হাতে সময় না নিয়ে গেলে আফসোস করতে হবে।
বালি ইন্দোনেশিয়ার (Indonesia) একটি দ্বীপ এলাকা ও প্রদেশ। বালি ও তার আশেপাশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপমালা নুসা পেনিদা, নুসা লেমবনগান ও নুসা সেনিনগান নিয়ে প্রদেশ গঠিত হয়েছে। এর রাজধানী দেনপাসার দ্বীপের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত।
বালিতে (Bali) যাওয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা যেটা তা হলো ইন্দোনেশিয়া অন এরাইভাল ভিসা (On arrival visa) হওয়ায় ভিসা নিয়ে ঝামেলা পোহাতে হয় না। শুধু প্লেনের টিকেট থাকলেই চলে। মালিন্দো, থাই এয়ার, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স , মালেশিয়ান এয়ারের বিমানে আপনি বালি যেতে পারেন। টিকেটের দাম ২২০০০-৪০০০০ টাকার মধ্যে উঠানামা করে।
মালিন্দো এক্ষেত্রে সাশ্রয়ী হবে। যাত্রার যত আগে টিকেট কাটা সম্ভব হবে তত সাশ্রয়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কুয়ালামপুরে ১ ঘন্টার ট্রানজিটসহ বালি পৌছাতে সময় লাগে ৬ ঘন্টা। বাংলাদেশের সাথে ২ ঘন্টার ব্যবধান ইন্দোনেশিয়ার।
ইন্দোনেশিয়ার ইমিগ্রেশনে যে জিনিসগুলো দেখতে চাইবে তা হলো আপনি কতদিনের জন্য ওখানে যাচ্ছেন, যে হোটেলে থাকবেন তার বুকিং কনফার্মেশন পেপার, পাসপোর্ট ডলার এন্ডর্স করা কিনা। সব দেখে আপনার পাসপোর্টে এন্ট্রি ভিসা দিয়ে দিবে ৩০ দিনের জন্য।
বালিতে আপনি বছরের যে কোন সময় যেতে পারেন। বালিতে দুইটা সিজন বলা চলে গ্রীষ্ম আর বর্ষা। এপ্রিল থেকে অক্টোবর হল গ্রীষ্ম বা শুকনা মৌসুম। আর নভেম্বর থেকে মার্চ বর্ষা বা ভেজা মৌসুম, এসময় বৃষ্টি হয় মূলত। বালিতে যদি ঘুরতে চান তবে ড্রাই সিজনে ঘুরতে আসা বেষ্ট হবে। এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মাঝে। এখন এপ্রিল-অক্টোবরের মধ্যে পিক ট্যুরিস্ট সিজন হল জুলাই আগস্ট। তাই ক্রাউড এভোয়েড করতে চাইলে আর কিছুটা পিক সিজনের মজা নিতে চাইলে জুনে অথবা সেপ্টেম্বর এ আসা ভাল। এই দুমাস বাদ দিলে আপনি সবকিছু একটু কম দামে পাবেন আর বেশি বার্গেইন করার সুযোগ পাবেন। তাছাড়া হোটেল বুকিং নিয়ে ভাবতে হবে না দিনে দিনে সব জায়গাতে হোটেল পাবেন। এছাড়া ডিসেম্বর মাস ও বাদ দেয়া উচিৎ, ক্রিসমাস আর নিউ-ইয়ারের জন্য এ সময় টা বেশ চাপ থাকে। তবে বেস্ট মাস হল জুন। যদি ট্রিপ ছোট হয় তবে জুনের শেষ সপ্তাহে যাওয়া বেটার।
লাখ লাখ টাকা নিমিষেই খরচ করার যায়গা এই ইন্দোনেশিয়া। ১০০ ডলার ভাংগালেই আপনি পেয়ে যাবেন ১৩ লক্ষ ৬০ হাজার ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়া। ১ লক্ষ রুপিয়া মানে বাংলদেশি ৬১৫ টাকা মনে রাখলেই হবে। টাকা ভাংতি অবশ্যই অথরাইজড মানি চেঞ্জার থেকে করবেন নয়তো প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এয়ারপোর্ট থেকে অল্প কিছু ডলার ভাংতি করে নেবেন ট্যাক্সি ভাড়া দেয়ার জন্য। এয়ারপোর্টে একটু কম দেয় মানি চেঞ্জে।
এয়ারপোর্ট থেকে যখন বের হবেন তখন এয়ারপোর্ট ট্যাক্সি সার্ভিস না নিয়ে চেষ্টা করবেন যেন বাইরে গিয়ে ব্লু বার্ড ট্যাক্সিতে মিটারে যেতে। মিটারে আপনার ৩০-৪০ হাজার রুপিয়া বাংলাদেশি টাকায় যা ১৮০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যেই থাকবে। আর এয়ারপোর্ট থেকে নিলে এই একই দুরত্বে ভাড়া নিবে ৭৫ হাজার থেকে দেড় লক্ষ রুপিয়া।
বালিতে হোটেল ভাড়া তুলনামুলক অনেক কম। বাংলাদেশি টাকা ১৫০০ থেকে ৪০০০ টাকার মধ্যে অনেক ভালমানের হোটেল পাওয়া যাবে ব্রেকফাস্ট সহ। বুকিং.কম/আগোডা.কম থেকে যাওয়ার আগেই হোটেল বুক করে যাওয়া উচিত। এলাকা হিসেবে কুটা বিচ বা লেগিয়ান বিচের আশেপাশেই হোটেল নির্বাচন করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
বালিতে ইন্দনেশিয়ার লোকাল খাবার নাসি গোরেন, নাসি আয়াম, মি আয়াম খেতে পারেন। দাম পরবে ৩০ হাজার রুপিয়া থেকে শুরু করে ৬০ হাজার রুপিয়া এছাড়া ম্যাকডোনালডস, কে এফসি, বারগার কিং তো আছেই। দামটাও বেশ কম। আর সি ফুড লাভারসদের জন্য তো এ এক স্বর্গ রাজ্য। কম খরচে অনেকরকম সি ফুড খেতে পারবেন।
যেদিন পৌছাবেন সেদিন কুটা বিচে বিকেল টা ঘুরে বেড়াতে পারেন। বিচের পাশে খুব সুন্দর কিছু রেস্টূরেন্ট সন্ধ্যা টা কাটিয়ে দিন অথবা জিম্বারান বিচে সানসেট দেখে বিচ ডিনার করতে পারেন যদি কাপল হয়ে থাকেন। এখানে খাবারের দাম অন্য জায়গার তুলনায় একটু বেশি। রাতে বিচওয়াক বা ডিসকভারি মার্কেট ঘুরে দেখতে পারেন। রাত ৮টার পরে মার্কেট অবশ্য বন্ধ হয়ে যায়।
বালিতে দর্শনীয় স্থানসমুহের মধ্যে যেতে পারেন নুসা দুয়া, উলুওয়াতু, পাদাম পাদাম বিচ, কিন্তামানি মাউন্ট বাটুর, উবুদ (Ubud), তানালক মন্দির, মাংকি ফরেস্ট (Monkey Forest)। এ জায়গাগুলো যেতে হলে অবশ্যই আপনাকে একটা গাড়ি ভাড়া করে নিতে হবে সারাদিনের জন্য (১০/১২ ঘন্টা). কিন্তামানি মাউন্ট বাটুর, উবুদ এক দিকেই পরবে। তানালট অন্য দিকে আর নুসাদুয়া আর উলুওয়াতু আরেকদিকে। তাই একদিনে সব দেখতে পাবেন না। কিন্তামনি উবুদ ঘুরে আসতে হলে সকাল সকাল ট্যাক্সি ভাড়া করে বের হয়ে পড়বেন। জীবন্ত আগ্নেয়গিরি দেখতে পাবেন যা থেকে মাত্র কিছুদিন আগেও অগ্নুৎপাত হলো। ওখানে দুপুরের লাঞ্চ করে নিতে পারবেন ১৫০০ টাকা পরবে জনপ্রতি ব্যুফে তে। আসার পথে উবুদে রাইস টেরেস , মানকি ফরেস্ট আর জলপ্রপাত দেখতে পাবেন। এখানেও চাইলে ট্রাডিশনাল বোরোঙ নাচ দেখতে পারেন। সকালে গিয়ে সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে আসতে পারবেন। বাংলাদেশী টাকায় ভাড়া পড়বে ৩৫০০ টাকার মতো। এসব জায়গায় ঢুকতে আপনার টিকেট কাটতে হবে।
উলুওয়াতু মন্দির, পাদাম পাদাম বিচ গেলে ওখানে সানসেট টা দেখতে ভুলবেন না। অসাধারণ এক দৃশ্য। সূর্য ডোবার পরে ওখানে বালিনেস নাচ আর ওদের ঐতিহ্যবাহী কেসাক নাচ দেখতে পারবেন তবে তার জন্য টিকেট কাটতে হবে। এই এলাকায় বাদঁরের বাঁদরামি টা একটু বেশি। সুযোগ পেলেই সানগ্লাস , ক্যাপ, খাবার চুরি করে ভাগবে। সময়ের অভাবে তানালট আমাদের যাওয়া হয়নি। কুটা থেকে ২০ কিমি দূরে। এখানেও আপনি উলুয়াতুরের মতো সমুদ্রের উপর মন্দির আর সানসেট দেখতে পাবেন। বালির দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম।
আর অবশ্যই যাবেন গিলি আইল্যান্ড। বালি’র সব থেকে সুন্দর জায়গা এই গিলি আইল্যান্ড। গিলি তে ৩ টা দ্বীপ আছে গিলি ত্রাওয়ানগান, গিলি মেনো আর গিলি এয়ার। গিলি ত্রাওয়ানগানে এক রাত থাকবেন সুন্দর কোনো রিসোর্টে। ভাড়া পড়বে বাংলাদেশী টাকায় ২০০০-৬০০০ টাকার মধ্যে। ছবির মতো সুন্দর গিলি তে কোনো গাড়ি বা যানবাহন নেই। ঘোড়ার গাড়ি আর সাইকেল হচ্ছে বাহন। ঘন্টা হিসেবে সাইকেল ভাড়া করে ঘুরতে পারবেন এই দ্বীপটাতে। এখানে আপনি স্নোরকেলিং করতে পারবেন জনপ্রতি দেড় লাখ রুপিয়া তে। ৪ ঘন্টার এই ট্যুরে আপনাকে গিলি মেনো আর গিলি এয়ার ঘুরে টার্টেল রিফ,ফিশ রিফ আর কোরাল আইল্যান্ড ঘুরে দেখাবে স্পিড বোটে আর সমুদ্রের নিচে সাঁতার কেটে আসবেন লাইফ জ্যাকেট, মাস্ক পরে। অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা নিঃসন্দেহে। রাতে বিচ পার্টি তে ডিজে’র তালে তালে সময়টা উপভোগ করতে পারেন। বালি থেকে গিলি যেতে আপনাকে ফাস্ট বোট এর টিকেট করতে হবে। জনপ্রতি ৫ লক্ষ রুপিয়া বা বাংলাদেশী ৩০০০ টাকার মতো খরচ পরবে রিটার্ন টিকেট সহ। অনলাইনে বা ট্যুর গাইড থেকেও টিকেট কিনতে পারেন তবে দাম নিয়ে একটু দামাদামি করে কমাতে পারবেন। ওরাই আপনাকে হোটেল থেকে পিক করে ওদের গাড়িতেই পাদাম হারবারে পৌঁছে দিবে। গাড়িতে ১.৩০ ঘন্টা লাগে জেটিতে যেতে। ওখান থেকে গিলি পৌঁছাতে বোটে লাগবে ২ থেকে ২.৩০ ঘন্টা।
যদি আপনার গিলি তে যাওয়া না হয় তবে অবশ্যই যাবেন নুসা দুয়া বীচে। ওখানে আপনি ওয়াটার রাইড, আন্ডার ওয়াটার এক্টিভিটিস গুলো করতে পারবেন। চাইলে এখানেও এক রাত কাটিয়ে নিতে পারবেন।
নিছে কিছু নির্দিষ্ট জায়গা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হল ...
সেমিনিয়াকঃ বালির ভিলা আর লাক্সারি রিসোর্ট হোটেল গুলো এখানে। যারা হানিমুনে আসে তাদের জন্য বেস্ট।
বালির একমাত্র এয়ারপোর্ট, এটা দেনপাসার শহরে পড়ে। উচ্চারণ টা কঠিন, Ng টা সাইলেন্ট থাকে। এখান থেকে সবচেয়ে কাছের শহর হল কুটা।
কুটা বালির সবচেয়ে ডেভেলপড শহর। এয়ারপোর্ট কাছে হওয়াতে সবাই এখানে এসে উঠে। আর বালির গতানুগতিক সব ট্যুরিস্ট স্পট গুলোর মাঝখানে পড়ে। এখানে হোটেল মোটামুটি সস্তা আর এখানে থেকেই মোটামুটি সাউথ বালি পুরোটা এক্সপ্লোর করা যাবে। যারা ৩-৪ দিনের জন্য বালি ঘুরতে আসেন তাদের এখানে থাকাই বেটার হবে। আর কুটার বাইরে বালির নাইট লাইফ নাই। অন্যান্য শহরগুলো রাত ৮-৯ টার পর সব ফাঁকা হয়ে যায়, দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। বালির সবচেয়ে হ্যাপেনিং প্লেস বলা যায়।
কুটা বিচ সার্ফিং এর জন্য বেস্ট। অনেকে এসে ৩-৪ দিনের জন্য সার্ফিং বোর্ড ভাড়া নিয়ে এখানে সার্ফিং করে। ইন্সট্রাক্টর সহ সার্ফিং করতে পারেন এখানে।
ওয়াটারব্লো নামে একটা জায়গা আছে। সমুদ্রের ধারে পাহাড়ে বড় বড় ঢেউয়ের আছড়ে পড়া দেখতে যায় সবাই। সি-ওয়াক আর ওয়াটার এক্টিভিটির জন্য ভাল।
সানুর বিচঃ এখানে সি-ওয়াক+ ওয়াটার এক্টিভিটি করতে পারেন। আর নুসা পেনিদা যেতে হলে আপনাকে এখান থেকেই ফাস্ট বোট নিতে হবে।
বালির সবচেয়ে সুন্দর পার্ট হল সেন্ট্রাল বালি। কালচার, লোকাল লাইফ, পাহাড় সব সেন্ট্রাল বালির মধ্যে।
উবুদঃ উবুদ শহর হল রিল্যাক্স করার জায়গা। এখানে হোটেল ভাড়া অনেক কম। উবুদ অনেকটা বালির মাঝখানে। তাই এখানে থেকেই আপনি পুরা সেন্ট্রাল বালি এক্সপ্লোর করতে পারবেন। বালির গ্রাম বললে ভুল হবেনা। ইয়োগা আর কুকিং ক্লাস করতে সব ইউরোপিয়ান রা এখানে থাকে। ক্রাফটের কাজ আর সুন্দর সব মন্দির এখানেই। গোয়া গাজাহ টেম্পল, তেগেনুনগান ঝর্না, গুনুং কাওয়ি টেম্পল, টেগাল্লাল্যাং রাইস ট্যারেস
উবুদ থেকে কিছুটা দুরেই জাতিলুয়িহ্ রাইস ট্যারেস। অনেকে এটাকে বালির সবচেয়ে সুন্দর রাইস ট্যারেস বলে। সময় কম থাকলে টেগাল্লাল্যাং রাইস ট্যারেস দেখলেও হয়।
বেদগুলঃ উবুদ থেকে ৫০ কি.মি মত দুরে হল বেদগুল শহর। বালির সেন্ট্রাল মাউন্টেন রেঞ্জ। একদম ঠান্ডায় কাঁপাকাঁপি অবস্থা। যদি এখানে যাবার ইচ্ছা থাকে তবে সাথে গরম কাপড় আনবেন।
বেদগুল এরিয়া তে গেলে আপনি অনেক মুসলমান পাবেন, বেদগুলে প্রথমেই যেটা পড়ে তা হল বেরাতান লেক।পাহাড়ে ঘেষা অপরুপ সুন্দর জায়গা। বেশিরভাগ সময় পাহাড়ের চুড়া মেঘে ঢেকে যায়। চোখ জুড়িয়ে যাবে দেখে। আর লেকের পাশেই বালি সবচেয়ে সুন্দর মন্দির। পুরা উলুন দানু বেরাতান টেম্পল। লেকের উপর অনেক সুন্দর সাজানো গোছানো মন্দির। আর চারপাশের আবহাওয়াতে এক অদ্ভুত মুগ্ধতা আছে যা নিজে অনুভব না করলে বোঝানো সম্ভব না।
এর পরে ৫ কি.মি গেলেই বুয়্যান লেক পড়ে, এখানেও লেকের পাশে একটা টেস্পল আছে। নামটা হল পুরা উলুন দানু বুয়্যান টেম্পল। এই মন্দির দেখার পর ১০ কি.মি মত গেলেই গিটগিট ওয়াটার ফল। গিটগিট সবচেয়ে সুন্দর ওয়াটারফল। এখানে পার্কিং স্পট থেকে অনেকটা পথ হেঁটে নিচে নামতে হয়। যেতে আসতে একঘণ্টা মত সময় লাগবে। ঘন্টাখানেক নিচে বসে ঝর্ণা দেখতে পারেন। তিনঘণ্টা সময় নিয়ে গেলে সবথেকে ভাল হয়।
গিটগিট ঝর্ণার ১০ কি.মি রেডিয়ামে আরও ৩ টা সুন্দর ঝর্ণা আছে। আলিং আলিং, বানয়ুমালা আর সেকুমপুল ফলস। যদি সেকুমপুল যান তবে একটা পুরো দিন চলে যাবে। অনেকটা পথ ট্রেক করে যেতে হয় আর গাইড ছাড়া যেতে পারবেন না। গুগল ম্যাপ ধরে সোজা চলে যাবেন এন্ট্রি গেট থেকই গাইড নিতে পারবেন। বিভিন্ন প্যাকেজ আছে ৭০০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত। আপনার যেটা সুবিধা হয় নিতে পারেন।
হান্দ্রা গলফ রিসোর্টঃ বালির সব জায়গাতে আপনি একধরনের গেট দেখতে পাবেন। যেটাকে বালিনিজ গেট বলে। হান্দ্রা গলফ রিসোর্টের বালিনিজ গেট টা অনেক বড় আর সুন্দর সাথে সহজেই এক্সেসিবল। এই গেটের সাথে ছবি তুলতে আপনাকে সময় ভেদে লাইন দিতে হতে পারে। আর এখানে ছবি তুলতে আপনাকে ১০ মিনিট সময় দিবে তার জন্য এন্ট্রি ফি ৩০ হাজার রুপি বা ১৮০ টাকা।
মুন্দুকঃ সেন্ট্রাল বালির একটা শহর, এটা বেদগুলের পাশেই। মুন্দুক অনেকটা বাংলাদেশের বান্দরবনের মত। মুন্দুকের রাস্তায় বাইক চালানো ওয়ান্স ইন এ লাইফটাইম এক্সপেরিয়েন্স। আপনি মাথা থেকে বের করতে পারবেন না এই রাস্তা। মেঘের মধ্যে দিয়ে বাইক চালাবেন রীতিমত। আর মুন্দুকে থাকতে হলে গরম কাপড় লাগবে। সেকুমপুল,আলিং আলিং, গিটগিট, মুন্দুক ফলস, এই ঝর্ণা গুলো সব দেখতে হলে আপনার মুন্দুকে থাকা বেটার হবে।
সেন্ট্রাল বালির পরেই নর্থ বালি শুরু। নর্থ পার্ট টা বালির পুরাতন ক্যাপিটাল ছিল ডাচ দের সময়ে। লোভিনা বিচ সবচেয়ে ফেমাস জায়গা। খুব বেশি কিছু নাই এদিকে। এখানে ডলফিন দেখার এক্টিভিটি আছে একটা, যার জন্য বেশিরভাগ ট্যুরিস্ট আসে। বেশকিছু ট্র্যাভেল ব্লগার এটাকে সাপোর্ট করেনা। ডলফিন দেখার এক্টিভিটি টা এতই পপুলার হয়েছে যে ডলফিনের চেয়ে নৌকা বেশি সেখানে। আর অনেকের মতে এটা ডলফিনদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
ইষ্ট বালিঃ ইষ্ট বালিতে অনেক কিছু আছে দেখার মত। দুটা ভলক্যানো ই ইষ্ট বালিতে। মাউন্ট বাতুর আর মাউন্ট আগুং।
পুরা লেমপুয়াং লুহুর টেম্পলঃ এই টেম্পলের নাম অনেকেই জানেনা। এখানে একটা বালিনিজ গেইট আছে যেটাকে স্বর্গের দরজা বলে লোকাল রা। মাউন্ট লেমপুয়াং এর উপরে অবস্থিত এই টেম্পল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১১৭৫ মিটার উপরে এই মন্দির। একদম নিচ থেকে মন্দিরে যেতে আপনাকে ১৭০০ মত সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হবে। প্রায় দুই ঘণ্টা সময় আর যথেষ্ট ভাল ফিটনেস দরকার। আর লোকাল দের মতে এখানে উঠার সময় যারা অভিযোগ করে যে পারবোনা বা অনেক কঠিন তারা কখনো উপরে যেতে পারেনা। এটা মাউন্ট আগুং এর বেশ কাছেই। মন্দিরের উপর থেকে মাউন্ট আগুং দেখা যায় অনেক ভালভাবে। আর যেহেতু পাহাড়ের চুড়ায় টেম্পল তাই চারপাশ দেখে চোখ জুড়িয়ে যাবে। আর এত উঁচুতে তাই ঠাণ্ডা হবে নরমাল ব্যাপার। অনেকে এখানে সানরাইজ দেখতে আসে তাই সেটা করতে হলে আপনাকে মাউন্ট বাতুর ট্রেকের মত করে রওনা দিতে হবে। এখানে কোন প্যাকেট ট্যুর নাই, নিজে নিজেই যেতে হবে। এডভেঞ্চার পছন্দ করলে কখনোই মিস করবেন না।
মোটামুটি যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করলাম বালি ট্যুরের বিস্তারিত জানানোর। আশা করি একটু হলেও উপকার পাবেন। পরিশেষে একটা কথা মনে রাখবেন যেখানেই ঘুরবেন দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন তাই পরিবেশ নষ্ট হয় এমন কিছু করবেন না।
এই রুটের প্যাকেজ সম্পর্কে জানতে ও যেকোনো প্রয়োজনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন :-
Office Address:
Trip Silo Office Adress: House # 477 (2nd Floor), Road # 32, New DOHS, Mohakhali. Dhaka # 1206.
Contact Number: 01689777444 , 01873111999
Office: +88 09678 111 999
Facebook Page: facebook.com/tripsilo