সুস্বাগত ঝকঝকে রূপোলী সুবর্ণ বালির ভূমি, বর্ণময় রঙ্গিন কাঠামোর ভূমি, আবেগপূর্ণ গান, প্রাণবন্ত নৃত্য, প্রাচীন লোক ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধ হস্তশিল্পসমৃদ্ধ রাজস্থান। রাজস্থান মানেই উষ্ণ-প্রাণবন্ত ও সরল জীবনধারা এবং ঐতিহাসিক যুদ্ধক্ষেত্রের উপর এর অবস্থান।
এই রাজ্য বিভিন্ন দর্শনীয় ঘটনাবলীর আসন সমৃদ্ধ। এই রাজ্য সফরকালের মাধ্যমে আপনি রাজপুত আড়ম্বরের হৃদয় বলে বর্ণিত সুন্দর মরুভূমি শহর যেমন জয়সালমের ও বারমের এবং উদয়পুর ও চিত্তোরগড় এর প্রতিভাকে চাক্ষুস করতে পারবেন। সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক ইমারত, প্রাসাদ এবং অভূতপূর্ব বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এবং উষ্ণ ও ধার্মিক অধিবাসীদের মন্দিরসহ এই অঞ্চলটি পর্যটকদের কাছে একটি স্বর্গোদ্যান হিসাবে পরিচিত। অনেক কিংবদন্তীর ভূমি, বীরত্ব ও উৎসর্গের গল্পে সমন্বিত রাজস্থান সম্ভবত ভারতে সবচেয়ে বেশী পর্যটকদের আকর্ষিত করে থাকে।
ভারতের উত্তর-পশ্চিম অংশে অবস্থিত রাজস্থান 'বর্ণময় ভূমি' হিসাবে পরিচিত। ভারতের প্রাচীনতম গিরিশ্রেণী আরাবল্লী দ্বারা বেষ্টিত, থর মরুভূমি অঞ্চলে ১৩২,১৪০ বর্গ মাইল এলাকা জুড়ে অবস্থিত, রাজস্থান ভারতের একটি বৃহত্তম রাজ্য। রাজস্থান, রাজপুত বংশ দ্বারা শাসিত ছিল এবং রাজপুতরা তাদের যুদ্ধ বীরত্ব এবং সাহসিকতার জন্য পরিচিত ছিল। ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে অবস্থিত এই স্থানটিতে ইতিহাস, পুরাকথা, শৌর্য, প্রণয় ও তার সাথে রূক্ষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি আকর্ষণীয় সংমিশ্রণ ঘটেছ। অনেক দেশীয় রাজ্যে বিভক্ত এই স্থানের একটি গৌরবময় অতীত রয়েছে এবং এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের সাহস ও বীরত্বের কাহিনী ভারতীয় ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।
এখানকার মহারাজাদের চমৎকার রাজত্ব এবং তাদের দুর্গ ও প্রাসাদের জন্য রাজস্থানকে "রাজাদের ভূমি" হিসাবেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। রাজস্থান- জঙ্গল, বাঘ, দ্যুতিময় গহনা, প্রাণবন্ত শিল্প এবং স্পন্দনশীল সংস্কৃতির জন্যও সুপরিচিত। রাজস্থান ভ্রমনকালে আপনি এখানকার সৌন্দর্য এবং রাজকীয়তাকে অনুভব করতে পারবেন।
রাজস্থানে পৌঁছানোর উপায় :-
এই রাজ্যটি কিংবদন্তী এবং পৌরাণিক ইতিহাসের মধ্যে প্লাবিত রয়েছে। এখানকার অসামান্য দূর্গ ও প্রাসাদ এবং রাজকীয় ঐতিহ্য ও রাজকীয় সাহসিকতার নির্দশন রাজস্থানকে ভারতের অন্যতম পর্যটনস্থল হিসাবে পরিচিত করেছে।
বিমান মাধ্যমে :-
এই রাজ্যের তিনটি প্রধান বিমানবন্দর হল জয়পুর, উদয়পুর এবং যোধপুর।
এই রাজ্য থেকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিমানসংস্থাগুলি নিয়মিত বিমান চালনা করে দিল্লি মুম্বাই এর মত দেশের প্রধান শহরগুলিকে সংযুক্ত করেছে। আপনি যদি দিল্লি থেকে রাজস্থান প্রবেশ করার পরিকল্পনা করেন তাহলে জয়পুর হল সবচেয়ে সুবিধাজনক প্রবেশপথ, অন্যদিকে মুম্বাই থেকে সবচেয়ে সুবিধাজনক প্রবেশপথ হল উদয়পুর।
রেল মাধ্যমে :-
রাজস্থানে একটি ভাল রেলওয়ে সংযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। এই রাজ্যের প্রধান রেলওয়ে স্টেশন জয়পুর, যোধপুর, আজমের, উদয়পুর ভারতের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলির সাথে সংযুক্ত রয়েছে। রাজস্থান পৌঁছানোর ভাল উপায় এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হলে আপনাকে “প্যালেস অন হুইলস্” নামক বিলাসবহুল পর্যটক ট্রেনে ভ্রমন করতে হবে যেখানে আপনি অবিশাস্য রাজকীয় দ্যুতির অনুভূতি লাভ করতে সক্ষম হবেন। এই রাজ্য সম্প্রতি “হেরিটেজ অন হুইলস্” নামক আরেকটি পর্যটক ট্রেন চালু করেছে এবং এখানেও আপনারা একটি বড় পরিসরে রাজকীয় ঐতিহ্যের আকর্ষণীয় ঝলক পরিলক্ষিত করতে পারেন।
সড়ক মাধ্যমে :-
জাতীয় এবং রাজ্য মহাসড়কের একটি সংযোগব্যবস্থা ব্যাপকভাবে এই রাজ্য জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে এবং যে কেউ খুব সহজেই সড়ক পথের মাধ্যমে রাজস্থান পৌঁছতে পারে। দিল্লি থেকে জয়পুর, চিত্রবৎ সড়কপথ বরাবর মাত্র ৫ ঘন্টায় পৌঁছানো যায়। তাই বেশীরভাগ পর্যটক সড়ক মাধ্যমে রাজস্থান ভ্রমন করতে পচ্ছন্দ করেন।
রাজস্থানের পরিদর্শনমূলক স্থান :-
আয়তনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজস্থান হল ভারতের একটি বৃহত্তম রাজ্য এবং এটি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটক গন্তব্যস্থলগুলির মধ্যে একটি। রাজস্থান তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সোনালি মরুভূমির সাথে সাথে ঐতিহাসিক দূর্গ এবং প্রাসাদ, শিল্প ও সংস্কৃতির জন্যও সুপরিচিত। এই রাজ্যটিও স্বর্ণ ত্রিভুজের একটি অংশ যেটি দিল্লি ও আগ্রা শহরকে সংযুক্ত করেছে।
ভারতে আগত এক তৃতীয়াংশ বিদেশী পর্যটক, পর্যটন সমৃদ্ধ রাজ্য রাজস্থান পরিদর্শন করে থাকেন। জয়পুরের প্রাচীন প্রাসাদ, উদয়পুরের সুন্দর এবং রোমান্টিক হ্রদ, জয়সলমীরের মরুভূমি এবং বালিয়াড়ি, মাউন্ট আবুতে জৈন মন্দির, পুষ্করে রঙিন গবাদি পশুদের মেলা, এবং যোধপুরের বিশাল উমেদ ভবন প্রাসাদ হল কয়েকটি নাম যেগুলি এই রাজ্যে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছে এবং রাজস্থানের মোট দেশজ উৎপাদনের ৮০ শতাংশ এই পর্যটনের মাধ্যমে সংগৃহীত হয়ে থাকে। পর্যটন, পরিষেবার ক্ষেত্রে এখানে কর্মসংস্থানেরও সুযোগ বৃদ্ধি করে থাকে।
প্যালেস অন হুইলস্ এবং রয়্যাল্ রাজস্থান অন হুইলস্ নামক দুটি বিলাসবহুল পর্যটক ট্রেনের মাধ্যমে আপনি এই রাজ্যের চমৎকার অন্বেষণ করতে পারেন।
রাজস্থানের দর্শনীয় স্থান :-
অ্যালবার্ট হল্ যাদুঘর
রাজস্থান রাজ্যের প্রাচীনতম যাদুঘর হল অ্যালবার্ট হল যাদুঘর বা কেন্দ্রীয় যাদুঘর, এটি জয়পুরে রাম নিবাস বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত। লন্ডনের আলবার্ট যাদুঘরের আদলে অ্যালবার্ট হল যাদুঘরটি নির্মিত হয়েছে এবং এটি ইন্দো-সারসেনিক স্থাপত্য শৈলীর প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। অবস্থান - রাজস্থানের জয়পুরে রাম নিবাস বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত।
আম্বের দূর্গ
রাজস্থানের রাজধানী শহর জয়পুর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত আম্বের দূর্গ জয়পুর- দিল্লি মহাসড়কের পাশে একটি চূড়ায় অবস্হিত। সুন্দর সাদা মার্বেল এবং লালপাথরের মিশ্রনে মুঘল ও রাজপুত স্থাপত্যের একটি সূক্ষ্ম মিশ্রন এখানে পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। সুন্দর মাওতা হ্রদ এখানকার মহিমাম্বিত গঠনকে একটি চমৎকার দৃশ্য প্রদান করে। বলিষ্ঠ প্রাচীর এবং সুদৃশ্য প্রাসাদ জয়পুরের আম্বের দূর্গকে এই রাজ্যের অন্যতম আকর্ষনীয় স্থান হিসাবে পরিচিত করেছে। এই দূর্গটি অম্বর্ দূর্গ নামেও পরিচিত।
সিটি প্যালেস
রাজধানী জয়পুরের সিটি প্যালেস হল স্থাপত্যের একটি অত্যাশ্চর্য নির্দশন। অষ্টাদশ শতাব্দীতে অম্বরের কচ্ছওয়াড়া রাজপুত রাজা মহারাজা দ্বিতীয় জয় সিংহ দ্বারা এই প্রাসাদটি নির্মিত হয়েছিল। এই প্রাসাদের অভ্যন্তরে সুন্দর মার্বেলের কারুকার্য, চমৎকার স্তম্ভ, জালি বা জাফরি কাজ এবং খচিত অলঙ্করণ লালিত রয়েছে যা পর্যটকদের এখানে আকর্ষিত করে। জালেব চক্ এবং ত্রিপোলিয়া গেট হল সিটি প্যালেসের দুটি প্রধান প্রবেশপথ যা রাজস্থানের জয়পুরে অবস্থিত। কলোনেল্ জ্যাকব সফলভাবে মুঘল, রাজপুত এবং ইউরোপীয় স্থাপত্য শৈলীর সংমিশ্রন ঘটিয়ে এই ঐশ্বর্যশালী স্থাপত্যটির নির্মান করেছিলেন।
গালতা মন্দির
মহিমাম্বিত যন্তর মন্তর এবং উজ্জ্বল হাওয়া মহল, বিভিন্ন মন্দির সমন্বিত, গোলাপী রং-এর শহর জয়পুরে সারা বছর ধরে প্রচুর পর্যটকের সমাগম হয়ে থাকে। জয়পুরের গালতা মন্দির হল একটি আকর্ষনীয় স্থান। অনমনীয় প্রতিবেশের অন্তরে অবস্থিত গালতা মন্দিরটি ‘বানর মন্দির’ নামেও পরিচিত। পাহাড়ের চূড়ার উপর অধিষ্ঠিত এই মন্দিরটি সুন্দর সিসোদিয়া রানী-কা বাগের নিকটে অবস্থিত। এটি কথিত আছে যে, মন্দিরের পবিত্র দ্বারটি ঐশ্বরিক মনুষ্য গালাভার অনুশোচিত ধর্মানুষ্ঠানের আয়োজনের ভূমিকা পালন করে। এই মঠে রামানন্দ-এর ধর্মীয় আদেশের অনুগামী, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভক্তদের বিপুল সমাগম পরিলক্ষিত হয়ে থাকে।
হাওয়া মহল
গোলাপী শহর জয়পুরে অবস্থিত রাজকীয় হাওয়া মহল সম্ভবত পর্যটকদের দ্বারা অনেকবার পরিদর্শনযোগ্য গন্তব্যস্থলগুলির মধ্যে একটি বলে বিবেচণা করা হয়ে থাকে। ১৭৯৯ সালে বিখ্যাত মহারাজা সওয়াই প্রতাপ সিং দ্বারা নির্মিত ‘হাওয়া মহল’-কে রাজস্থানের রঙিন ইতিহাস ও ঐতিহ্য-এর সংগ্রহস্থল বলে মনে করা হয়।
চমৎকার সিটি প্যালেস এর একটি অংশ হাওয়া মহল-এ রাজস্থান ও মুঘল স্থাপত্যের একটি বিস্ময়কর মিশ্রন পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। রাজস্থানে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য এবং প্রায় পাঁচ তলার সমান উচ্চতাবিশিষ্ট এই সৌধটিতে বিভিন্ন বর্ণবিশিষ্ট বেলেপাথরের কারুকার্য পরিলক্ষিত হয়ে থাকে।
যন্তর মন্তর
নি:সর্গ এবং সুবিশাল মহাবিশ্ব মানবজাতির কাছে সবসময় একটি বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে থাকে। মহাবিশ্ব প্রাচীনকাল থেকেই মানুষকে মুগ্ধ করে আসছে। নি:সর্গের রহস্য আবিষ্কারের জন্য যেসমস্ত মানমন্দির তৈরি করা হয়েছিল তাদের মধ্যে একটি হল জয়পুরের যন্তর মন্তর। সমগ্র উত্তর ভারতের উপর মহারাজা সওয়াই জয় সিংহ দ্বারা নির্মিত পাঁচটি মানমন্দিরের মধ্যে জয়পুরের যন্তর মন্তরটি হল বৃহত্তম এবং সবচেয়ে ভালভাবে সংরক্ষিত একটি নির্মাণ। গোলাপী শহরে অবস্হিত যন্তর মন্তরে বিভিন্ন পাথর গাঁথনি দ্বারা নির্মিত একাধিক কাঠামো এবং একটি ক্ষেত্রতত্বসংক্রান্ত রূপ রয়েছে যা সারা বিশ্বের শিল্পী, স্থপতি এবং দক্ষ ইতিহাস-রচয়িতাদের মনোযোগকে আকর্ষিত করে।
কুম্ভলগড় দূর্গ
মহিমাণ্বিত কুম্ভলগড় দূর্গটি, ‘হ্রদ শহরে'-রে উত্তরে চূরাশি কিলোমিটার দূরত্বে ইতিহাস সম্বলিত উদয়পুর ভূদৃশ্যের মধ্যে অবস্থিত। কাল্পনিক মহা রানা কুম্ভের অকপটতার সাক্ষ্যরূপে চিত্তোরগড় দুর্গ সুপরিচিত। এটি সমরপতি রাজবাড়ীর ধ্বংসাবশেষের উপর ১৪৪৫ থেকে ১৪৫৮ সালের মধ্যে নির্মিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়ে থাকে, খৃষ্ঠপূর্ব দ্বিতীয় শতকে এক জৈন রাজা এখানে বসবাস করতেন - এই দুর্গে একটি জৈন মঠের অবশিষ্টাংশ হল এর প্রমাণস্বরূপ।
মেহরানগড় দুর্গ
ভারতের অসামান্য এবং ঐশ্বর্যশালী মেহরানগড় দুর্গটি রাজস্থানের যোধপুর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরত্বে ১৫০ মিটার উঁচু পাহাড়ের ওপর অবস্থিত।
রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যান
ভারতের একটি প্রখ্যাত অভয়ারণ্য হল রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যান যা আরাবল্লী পর্বতমালা এবং বিন্ধ্য পর্বতের মালভূমি মধ্যে অবস্থিত। এই অভয়ারণ্যটি ১,৩৩৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এবং এখানে দিনের বেলায় জলাভূমি ও হ্রদের কাছাকাছি অঞ্চলে রয়েল বেঙ্গল টাইগার্ দেখা যায় এবং এই অভয়ারণ্যটি রয়েল বেঙ্গল টাইগারে্র আশ্রয়স্থল হিসাবেও প্রসিদ্ধ।
অতীতে এই এলাকাটি জয়পুরের মহারাজাদের শিকারের স্থান হিসাবে চিহ্নিত ছিল। এটি ১৯৫৫ সালে একটি ক্রীড়া অভয়ারণ্য হিসাবে ঘোষিত হয় এবং পরর্বতীকালে অর্থাৎ ১৯৮০ সালে এই অভয়ারণ্যটি একটি জাতীয় উদ্যান ঘোষিত হয় এবং অবশেষে ১৯৮০ সালে ভারতের ব্যাঘ্র সংরক্ষন কেন্দ্র হিসেবে কাজ শুরু হয়। এই জাতীয় উদ্যানটিতে দূর্গের সচিত্র ধ্বংসাবশেষ রয়েছে যে কারনে এটি একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে পরিচিত।
সরিস্কা জাতীয় উদ্যান
সরিস্কা জাতীয় উদ্যানটি আরাবল্লী পর্বতমালায় শায়িত ও আলওয়ার জেলার মধ্যে অবস্থিত, ১৯৫৮ সালে এটিকে অভয়ারণ্য হিসাবে ঘোষণা করা হয় এবং ১৯৭৯ সালে ব্যাঘ্র সংরক্ষন কেন্দ্র হিসেবে এই উদ্যানটিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই জাতীয় উদ্যানটি ৮০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এবং এটি বিভিন্ন উদ্ভিদকুল, প্রাণিকুল এবং বিভিন্ন পাখিদের গৃহস্থল হিসাবে পরিচিত।
বাঁদেশ্বর মন্দির
এটি রাজস্থানের রাজকীয় রাজ্য বিকানের-এ অবস্থিত, যা প্রাসাদ এবং মন্দির সহ তার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং বিস্ময়কর সূক্ষ্ম স্থাপত্যের জন্য জনপ্রিয়। বাঁদেশ্বর মন্দিরটি তার সুন্দর অভ্যন্তরীণ সজ্জা, দেওয়াল চিত্র এবং শিল্পের জন্য বিখ্যাত এবং বিকানেরের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থান হিসাবে পরিচিত।
রানী সতী মন্দির
রাজস্থান রাজ্যের একটি ঐতিহাসিক শহর হল ঝুনঝুনা যা জয়পুর শহর থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। চৌহান রাজবংশের সময়কাল থেকে ঝুনঝুনা একটি বাণিজ্যিক এবং লেনদেনের স্থান হিসাবে পরিচিত। ঝুনঝুনা শহরটি তার ধর্মীয় ভাবাবেগের জন্য বিখ্যাত, এখানে শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় রানী সতী মন্দির অবস্থিত রয়েছে। এই শহরকে জটিল ভাস্কর্য এবং ফ্রেস্কো সহ সজ্জিত প্রতীকী রাজস্থানী হাভেলীগুলির বাসস্থান হিসাবে গন্য করা হয়ে থাকে।
ভ্রমনের সেরা সময় :-
রাজস্থান ভ্রমনের শ্রেষ্ঠ সময় হল মধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য মার্চ পর্যন্ত, এই সময় খুব বেশী গরম থাকে না এবং ভ্রমণকারীরা গরমের জন্য বিরক্ত না হয়ে ঘুরে বেড়ানো উপভোগ করতে পারেন। দেশী-বিদেশী অনেক পর্যটকদের পছন্দের স্থান হল রাজস্থান, এই রাজ্যের সমস্ত প্রধান শহর ও পর্যটক গন্তব্যস্থলগুলির পরিদর্শন করতে আপনার ১০ দিন সময় লাগবে। রাজস্থান সম্পর্কে আরেকটি ভাল জিনিস হল এই রাজ্যে ভ্রমণকারীরা যে কোন বাজেটে এখানকার ভ্রমণকে উপভোগ করতে পারেন। আপনি যদি বাজেট ভ্রমনকারী হন তাহলে আপনার খরচ ৪০,০০০/- - ৫৫,০০০/- টাকার মধ্যে থাকবে, যদি মধ্য পরিসীমার পর্যটক হন তাহলে আপনার খরচ হবে ৫৫,০০০/- - ৮০,০০০/- টাকার মধ্যে এবং এক জন উচ্চ শ্রেনীর পর্যটকের ক্ষেত্রে ৮০,০০০/- - ১,২০,০০০/- টাকা খরচ হয়ে থাকে।
রাজস্থানের হোটেল :-
রাজস্থানে বসবাসের জন্য বিভিন্ন বিকল্প বর্তমান রয়েছে। এই রাজ্যে উচ্চ বিলাসবহুল হোটেল থেকে সাধারন মানের অসংখ্য হোটেল রয়েছে। রাজস্থানের হোটেলগুলি তাদের আতিথেয়তা এবং পরিষেবার জন্য অবকাশ যাপনের একটি আদর্শ স্থান হিসাবে পরিচিত।
রাজস্থানের কেনাকাটা :-
রাজস্থানে কেনাকাটা করা একটি আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা। এই রাজ্যটি ঐতিহ্যগতভাবে হস্তশিল্প এবং হস্তচালিত তাঁত তৈরীর শিল্পে সমৃদ্ধ।
শিল্প ও কারুশিল্পের ঐতিহ্যে উন্নত রাজস্থান রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সমৃদ্ধি লাভ করেছে। এই রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরণের হস্তশিল্প দেখা যায় যা আপনাকে এখানে কেনাকাটা করতে আনন্দিত করবে। রাজস্থানে অতি মূল্যবান এবং মূল্যবান পাথররে প্রাচুর্যের কারণে এখনকার স্থানীয় দক্ষ কারিগররা এইগুলি থেকে সূক্ষ্ম গহনা প্রস্তুত করে থাকেন।
রাজস্থানী কারিগরদের দ্বারা নির্মিত বস্ত্র ও চামড়ার হস্তশিল্পও এখানকার কেনাকাটার একটি মাধ্যম হিসাবে মনে করা হয়ে থাকে। রাজস্থানী কারুশিল্পের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হল স্পন্দনশীল রং এর দ্যুতি।
এখানকার কারিগরেরা মাটি দিয়ে অনেক রকমের বিস্ময়কর বস্তু সামগ্রী তৈরী করে থাকেন। রাজস্থানী চিত্রাঙ্কণ, যা সুক্ষ রেখা এবং উজ্জ্বল রঙের আকর্ষণীয় সংমিশ্রণের মাধ্যমে গঠিত একটি উদ্দীপনাময়কে প্রর্দশিত করে, যা ভারতীয় শিল্পকলার একটি প্রকৃত রূপ হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে।
Office Address:
Trip Silo Office Adress: House # 477 (2nd Floor), Road # 32, New DOHS, Mohakhali. Dhaka # 1206.
Contact Number: 01689777444 , 01873111999
Office: +88 09678 111 999
www.tripsilo.com