অনেকের একমাত্র নেশা ঘুরে বেড়ানো। ভ্রমণপিপাসু এই মানুষদের মধ্যে একটি দল রয়েছে যারা চান শান্তির ভ্রমণ। আর অন্য দলটির কাছে ভ্রমণ যত বেশি বিপজ্জনক এবং কঠিন হবে, তারা তত বেশি তৃপ্তি পাবেন।বেশ অবাক করা একটি স্থান আমাদের এই পৃথিবী। একের পর এক আশ্চর্য সব স্থানে পরিপূর্ণ পৃথিবীর কয়টি স্থান সম্পর্কেই বা আমরা জানি? আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো এমন কিছু স্থানের কথা, যেগুলি এক কথায় “বসবাসের অযোগ্য”। এমনকি সেসব জায়গায় ঘুরতে যাওয়াটাই হতে পারে অনেক বেশি ঝুঁকির কারণ।
ডেথ ভ্যালি, যুক্তরাষ্ট্রঃ
পৃথিবী যদি আমাদের ঘর হয়ে থাকে তাহলে ডেথ ভ্যালি সেই ঘরের গরম ওভেন! অসাধারণ দেখতে এই মরুভূমিটির তাপমাত্রা পৃথিবীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। যা ৫৬.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আপনি যত শক্তিশালীই হন না কেনো, ডেথ ভ্যালিতে বেড়াতে গেলে খুব দ্রুতই সূর্যের উত্তাপে কাবু হয়ে যাবেন। পানি ছাড়া ডেথ ভ্যালিতে একজন মানুষ বাঁচতে পারবে সর্বোচ্চ ১৪ ঘণ্টা।
দ্যা ডানাকিল ডেজার্ট, এরিত্রিয়াঃ
ডানাকিল ডেজার্টের তাপমাত্রা প্রায়ই ৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠে। যুক্তরাষ্ট্রের ডেথ ভ্যালির কাছে এটাকে তেমন কিছু মনে হচ্ছে না, তাইতো? আসলে তাপমাত্রাটাই একমাত্র ঝুঁকির কারণ নয় এই মরুভূমিতে। এখানে রয়েছে বেশ কিছু সক্রিয় আগ্নেয়গিরি, যা থেকে সবসময়ই নির্গত হয় বিষাক্ত গ্যাস। পৃথিবীর বুকে জাহান্নামের ছোট্টো একটি টুকরা হিসেবে সহজেই চিহ্নিত করা যায় এই স্থানটিকে। ডানাকিল ডেজার্ট এতোটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে অভিজ্ঞ গাইড ছাড়া এখানে বেড়াতে যাবার উপরেও রয়েছে বিপুল নিষেধাজ্ঞা।
স্নেক আইল্যান্ড, ব্রাজিলঃ
নাম শুনেই অনেকে দ্বিধাবোধ করবেন এই দ্বীপটি সম্পর্কে শোনার ব্যাপারেও। বিশেষ করে যাদের সাপের প্রতি ব্যাপক ভীতি কাজ করে। এই দ্বীপটি ব্রাজিলে অবস্থিত। সঠিকভাবে এর অবস্থান কেউই জানে না বা জানার প্রয়োজন বোধও করে না। তবে গুগল ম্যাপসে খুঁজলেই পেয়ে যাবেন দ্বীপটির অবস্থান।
নামের যথার্থ স্বার্থকতা বজায় রেখে এই দ্বীপটি। বোথরোব নামক পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত সাপগুলির একটিতে পরিপূর্ণ এই দ্বীপ। গবেষকদের দাবি, এই দ্বীপের প্রতি স্কয়ার মিটারে বসবাস করে কমপক্ষে পাঁচটি সাপ! এই দ্বীপে পা ফেলার ব্যাপারেও শক্ত নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ব্রাজিল সরকারের।
মাউন্ট ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্রঃ
পৃথিবীকে ঘরের সাথে তুলনা করে ডেথ ভ্যালিকে রান্নাঘরের ওভেনের সাথে তুলনা করলে মাউন্ট ওয়াশিংটনকে তুলনা করতে হবে রান্নাঘরের ফ্রিজটার সাথে। মাউন্ট ওয়াশিংটনের সামিটে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত গতিতে বয়ে যায় ঠাণ্ডা বাতাস! বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ এখানে রেকর্ড করা হয়েছে ঘণ্টায় ২০৩ মাইল বা ৩২৭ কিলোমিটার। পাশাপাশি তাপমাত্রা কমে দাঁড়ায় শূন্যের নিচেও চল্লিশ ডিগ্রী পর্যন্ত। প্রায় ৬২৮৮ ফিট লম্বা খাড়া এই পাহাড়ের চূড়াকে পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক পাহাড়ের চূড়া বলা যেতে পারে। এখানে উঠতে গেলে একজনের শরীরের উপর দিয়ে যা যায় তাকে তুলনা করা যায় কেবলমাত্র এভারেস্টের চূড়ার ওঠা কারো সাথেই।
মাদিদি জাতীয় উদ্যান, বলিভিয়াঃ
দেখতে অসাধারণ এই স্থানটি পরিপূর্ণ পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত এবং মারাত্মক সব উদ্ভিদে! এখানকার কোনো গাছের পাতা শরীরের সংস্পর্শে আসামাত্রই শুরু হয় ভয়াবহ চুলকানি। চুলকানির পাশাপাশি শরীরে র্যাশ ওঠা শুরু করে যার ফলাফলে তৈরি হয় মাথা ঘোরা। যেকোনো কাঁটা-ছেড়া, এমনটি একটা ছোটো ক্ষতও খুব দ্রুত ট্রপিকাল বিভিন্ন ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার কারণে ইনফেকশনে পরিণত হয়।
- ধন্যবাদ।